মনপুরা (ভোলা) প্রতিনিধিঃ ভোলার মনপুরার ৪ জেলে ট্রলারের অপহৃত ৪ মাঝিক মুক্তিপণের টাকা দেওয়ার পর ছেড়ে দিয়েছে হাতিয়ার জলদস্যু মহিউদ্দিন বাহিনী। মুক্তিপণে উদ্ধার হয়ে ফিরে আসায় জেলে পরিবারের মাঝে স্বস্তি বিরাজ করছে।
বৃহস্পতিবার দুপুর ১ টায় ট্রলারযোগে মনপুরায় আসে মুক্তিপণে উদ্ধার হওয়া জেলেরা।
অপহৃত জেলেদের উদ্ধার হওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করেন উদ্ধার হওয়া জেলেদের আড়তদার গিয়াস উদ্দিন আযম এবং জেলে পরিবারের সদস্যরা। মনপুরায় আসার সাথে সাথে ফের উদ্ধার হওয়া জেলেরা মেঘনায় মাছ শিকারে চলে যায় বলেও নিশ্চিত করেন তারা।
মৎস্য আড়তদার ও জেলেদের পরিবারে সূত্রে জানা যায়, অপহৃত ৪ জেলের মুক্তিপণ হিসাবে ৪ লক্ষ টাকা দাবী করে জলদস্যু মহিউদ্দিন বাহিনী। পরে দর কষাকষি করে ৩ লাখ টাকায় মুক্তি দেয় জলদস্যু বাহিনী।
মুক্তিপণে উদ্ধার হওয়া জেলেরা হলেন, জসিম মাঝি, সাইফুল মাঝি, বাচু মাঝি ও মিজান মাঝি। এদের সবার বাড়ি মনপুরা উপজেলার দক্ষিণ সাকুচিয়া ইউনিয়নের রহমানপুর গ্রামে।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে জেলেদের একটি সূত্রে জানা যায়, রাতে অপহৃত ৪ জেলের মুক্তিপণের টাকা নিয়ে ট্রলার করে হাতিয়া যায় অপহৃত জসিম মাঝির ভাই ফিরোজ সাইফুল মাঝির ভাই আলমগীর। পরে জলদস্যু মহিউদ্দিন বাহিনীর প্রধান মহিউদ্দিনকে ৩ মাঝির মুক্তিপণ বাবদ ৭৫ হাজার টাকা করে দুই লক্ষ ২৫ হাজার টাকা ও অপর ১ মাঝির মুক্তিপণ বাবদ ৬৫ হাজার টাকা সহ ২ লক্ষ ৯০ হাজার টাকা দিলে ৪ মাঝিকে ছেড়ে দেয় জলদস্যু বাহিনী। পরে ট্রলারযোগে উদ্ধার হওয়া জেলেরা মনপুরায় ফিরে আসে। মনপুরায় এসে তারা নদীতে মাছ শিকারে যায় বলেও নিশ্চিত করে সূত্রটি।
এই ব্যাপারে উদ্ধার হওয়া জসিম মাঝির ভাই ফিরোজ জানায়, মুক্তিপণের বিনিময়ে ৪ মাঝিকে উদ্ধার করে মনপুরায় নিয়ে আসা হয়েছে। তিনি আরও জনান, পুলিশ ও কাস্টগার্ডকে জানালে অপহৃত জেলেদের মেরে ফেলার হুমকি দেয় জলদস্যু বাহিনী। তাই তারা পুলিশ ও কাস্টগার্ডকে না জানিয়ে জলদস্যুদের মুক্তিপণের টাকা দেয় তারা।
এই ব্যাপারে হাতিয়ার নিঝুম দ্বীপের নৗেপুলিশ ফাঁড়ির দায়িত্বে থাকা এস.আই কাউছার আলম জানান, অপহৃত জেলেরা উদ্ধার হয়েছে। কি মুক্তিপণের টাকা দিয়ে উদ্ধার হয়েছে কিনা তিনি বলতে পারেন না। তবে তিনি জেলে আড়তদার ও জেলে পরিবারের কাছে তথ্য দিয়ে সহযোগিতা বা জিডি করতে বললেও তারা কােন সহযোগিতা করেনি।
এই ব্যাপারে মনপুরা থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) সাইদ আহমেদ জানান, জেলেরা ফিরে এসেছে। তবে জেলে পরিবারের কেউ অভিযোগ করেনি। এমনকি তারা কােন প্রকার পুলিশকে সহযোগিতা করেনি।
উল্লেখ্য, গত ৪ঠা জানুয়ারী বুধবার ভাের রাত ৫ টায় মনপুরার চরপিয়াল ও হাতিয়ার উড়ির চর সংলগ মেঘনায় মাছ শিকারে যায় সাইফুল মাঝি, জসিম মাঝি, বাচ্চু মাঝি ও মিজান মাঝি। পরে হাতিয়ার জলদস্যু মহিউদ্দিন বাহিনী চার জেলে ট্রলারে হামলা চালিয়ে মাছ, নগদ টাকা সহ চার জেলে ট্রলার থেকে চার মাঝিকে অপহরণ করে মুক্তিপণ দাবী করে।
দৈনিক কলম কথা সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।